কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি:
জয়পুরহাট কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিককে গ্রেফতার করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) ৷
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পিবিআই এর বগুড়ার এসপি কাজী এহসান কবির।
রবিবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যা রাতে তার পরিষদ কার্যালয় থেকে একটি কাগজ দেখে রহস্যজনক ভাবে আওয়ামী এ নেতা আটক হন বলে জানাগেছে।
শওকত হাবিব তালুকদার কালাই উপজেলার মাত্রাই গ্রামের মৃত আজাহারুল ইসলাম তালুকদার ছেলে।
এ ব্যাপারে পিবিআই বগুড়া এসপি কাজী এহসান কবির ফোনে সাংবাদিকদের জানান, ২০১৯ সালে মাত্রাই এলাকায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে একটি হত্যার ঘটনা ঘটে। শওকত হাবিব তালুকদার ওই মামলার ১ নম্বর আসামি। থানা পুলিশ ও সিআইডি শওকতসহ তিন জনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে পিবিআই ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেলে শওকত হাবিব তালুকদার ওই হত্যার সাথে জরিত বলে তথ্য পায়। এ কারনে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ (সোমবার) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক দুটি হত্যা মামলা রয়েছে ওই দুটি মামলা থেকে জামিনে রয়েছেন ৷ রবিবার বিকেল পর্যন্ত তিনি পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে এসে রাত ৮ টায় তার কার্যালয়ে বসে। এমন সময় দুজন এসে চেয়ারম্যান লজিকের সাথে সাক্ষাৎ করে। পরে তাকে কাগজ দেখিয়ে বগুড়া পিবিআই তুলে নিয়ে গেছে।
তারা আরো জানায়, আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে বগুড়া পিবিআই এর শরণাপন্ন হলে উপরের নির্দেশ আছে বলে সাক্ষাৎ করতে দেয়নি ৷ ইউনিয়নের এর লোকজন চেয়ারম্যানের অবস্থান জানতে উৎগ্রীব।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, জমি জমা সংক্রান্ত জেরে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট সকাল ১০টায় মাত্রাই এলাকায় মোজাহার আলী সরদার ও নুরন্নবীদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই সময় খোদেজা বেগম নামে এক নারীর মাথায় কোদাল দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরতর আহত হন। এসময় তার ছেলে লুৎফর রহমান এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করা করা হয়। পরে দুজনকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক খোদেজাকে বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দুপুরে খোদেজার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিককের হুকুমে অন্য আসামিরা মারধর করেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এরপর নিহতের স্বামী মোজাহার আলী সরদার বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। এতে আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিককে এক নম্বর আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি কালাই থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান ও জয়পুরহাট সিআইডির ইন্সপেক্টর জিয়াউর রহমান তদন্ত করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মামলার প্রথম তিন আসামিকে অব্যাহতি দিতে আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়। অব্যাহতির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিক ও মাহমুদুন্নবী সুজন ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। আরেক আসামি মোফাজ্জল হোসেন মারা গেছেন।
মামলার বাদী মোজাহার আলী সরদার মারা যাওয়ায় আদালতের নির্দেশে তাঁর ছেলে লুৎফর রহমান বাদী হিসেবে নারাজি দেন। এরপর আদালত মামলাটি পিবিআই বগুড়াকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
Leave a Reply